কুতুবদিয়া উপজেলা প.প কার্যালয় যেন ছাগলের খোঁয়াড়! শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হওয়ার তিন মাস পর উপজেলা প.প. কর্মকর্তা বিধান কান্তি রুদ্র অফিসে হাজির হয়। বিষয়টি ‘টক অব দ্য’ কুতুবদিয়ায় পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে অফিসে গিয়ে জানা গেছে, রবিবার সকাল ১১ টা নাগাদ তিনি অফিসে আসলেও হাত ব্যাগ রেখে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করেন। প্রকাশিত সংবাদে অফিস কম্পাউন্ডে ছাগল কোথায় থেকে আসছে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে আজ সবাইকে, এমন ধমক দিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। ১২ টায় অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বেলা ১ টায় গিয়েও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। বেলা ২ টায় অফিসে পৌঁছে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে কর্মচারীদের আবারও শাসান তিনি। তার দাবী একটাই, অফিসের গেইটে বাঁধা ছাগল কার, সেটি প্রমাণ না করা পর্যন্ত আমি কাউকে ছাড় দেব না, একদম না,,ইত্যাদি ইত্যাদি কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকের উপস্থিতিতে দায়িত্বরত আনসার সদস্য শফিসহ অফিসের ২/৩ জন কর্মচারীকে জেরা করে বিষয়টি জানতে চান তিনি।
অভিযুক্ত বিধান কান্তি রুদ্র জানান, ১৯৮৭ সাল থেকে তিনি চাকুরী করেন। লকডাউনের কারণে এতদিন অফিসে আসতে পারেননি। এতে কি ক্ষতি হয়েছে। তবে অফিসের কার্যক্রম একদিনও বন্ধ ছিল না বলে দাবী করেন তিনি। মাঠকর্মী ৫০ জনের কাজও তদারকি করছি নিয়মিত। করোনাকালীন বেশি কাজ ও রোগিদের সেবা না করতে প্রশাসনের নির্দেশনা ছিল। আগামী ২০ তারিখ থেকে কাজ পুরোদমে শুরু করবো।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা বিধান কান্তি রুদ্র গত ৩ মাসে একদিনও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে আসেননি। শনিবার বেলা ১২ টার দিকে কয়েকজন সংবাদকর্মী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন মুল কার্যালয়ের বাইরে তালা লাগানো। গেইটে মুখে আরেকটি তালা লাগিয়ে সেখানে ছাগল পালন করা হচ্ছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে এলে ছবিটি ধারণ করেন তারা। সংবাদকর্মীরা নিজেদের ফেইসবুকে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য দিয়ে ছবিটি পোস্ট করেছেন। ছবিটি সম্পর্কে জানতে চেয়ে বিভিন্ন ধরনের কমেন্টস করেছে অনেকে।এদিকে, কুতুবদিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে এটি ছাগল পালনের খোয়াড়ে পরিণত হওয়ায় খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ বিষয়ে বিধান কান্তি রুদ্র আরো জানান, তিনি হাঁটুতে ব্যথার কারণে আপাততঃ কুতুবদিয়ায় অফিস করছেন না। বিষয়টি উধ্বর্তন কর্মকর্তা জানেন। কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তার কয়েকজন লোক তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন এবং তারাই আমার অফিসে ছাগল বেঁধে সাংবাদিকদের ছবি দিয়ে সংবাদ প্রচার করান। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে আমার একটু ভুল বুঝাবুঝি ছিল, তা আজ-কালের মধ্যে যেভাবে হোক সমাধান করবো।প্রয়োজনে উনার যাবতীয় দাবী আমি মেনে নিবো। হাসপাতালের যে ওটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে,তা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের। হাসপাতালে নিজস্ব ওটি গুদাম ঘর হিসেবে অকেজোভাবে ফেলে রেখেছে। আর আমাদের ওটি নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। বিষয়টি উধ্বর্তন কেউ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে এবং তা দিবালোকের মত সত্য।
প্রসঙ্গতঃ বিগত ২২ নভেম্বর ২০১০ সাল থেকে কুতুবদিয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্বে পালন করে আসছে বিধান কান্তি রুদ্র। তার মুল দায়িত্ব চকরিয়া উপজেলায়। তার শাশুড় বাড়ী লোহাগাড়া হলেও পরিবার পরিজন নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের এনায়েত বাজার এলাকায় থাকেন। চাকুরীর সুবাধে তিনি নিজ বাড়ি চকরিয়া কাকারায় একা বসবাস করেন।কাকারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেও দাবী করেন তিনি।